গুণগত মানের সাথে আপস না করে আপনার পিডিএফের আকার কমিয়ে আনবেন কিভাবে
Bengali (বাংলা) translation by Syeda Nur-E-Royhan (you can also view the original English article)



ব্যবসায়িক প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে আপনার মায়ের আয়োজনে ক্রিস্টমাস পটলাক পার্টির নিমন্ত্রণ পর্যন্ত যে কোন নজর-কাড়া ডিজিটাল ডকুমেন্ট এবং মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল তৈরিতে পিডিএফ একটি নির্ভরযোগ্য ফরম্যাট। মূল টেক্সট ছাড়াও আপনি চাইলে ফটো, ক্লিপআর্ট, এবং অন্যান্য গ্রাফিক উপাদান জুড়ে দিয়ে এটিকে দিতে পারেন ভিন্ন আমেজ।
এই ডিজাইনের উপাদানগুলো যেমন আপনার ডকুমেন্টটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে তেমনি পিডিএফ ফাইলটি ফুলে ফেঁপে বিশাল আকার ধারণ করতে পারে। অনেক সময় এতে করে ফাইল পাঠানো বা ডাউনলোড করা অসম্ভব হয়ে যায়। তার উপর, সাধারণত যেসব কম্প্রেশন প্রক্রিয়া আছে, তা দিয়ে কপিগুলোতে ইমেজ অস্পষ্ট হয়ে যায়। ফলে আপনার ডকুমেন্টটি নিম্ন মানের হয়ে যায়।
এই টিউটোরিয়ালে, আমি আপনাদের দেখাব কিভাবে ইমেজের গুণগত মানের সাথে আপস না করেই বড় বড় পিডিএফ ফাইলের আকার যে কোন কম্পিউটারে ছোট করা সম্ভব। এতে করে মানুষ আপনার অস্পষ্ট ইমেজ দেখে আশাহত হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা না করেই মানসম্পন্ন ডকুমেন্ট তৈরি করে পাঠাতে পারবেন।
ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য: কোয়ার্টজ ফিল্টার ব্যবহার করুন
অপারেটিং সিস্টেম টেনে যে ডিফল্ট প্রিভিউ অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে তা দিয়ে আপনার পিডিএফের মূল কাজগুলো সহজেই করা সম্ভব। ফাইল ভিউ করা থেকে শুরু করে অ্যানোটেশন বা ফাইল কম্প্রেশন পর্যন্ত সব। পিডিএফ কম্প্রেস করতে চাইলে শুধুমাত্র File > Export... > Quartz Filter-এ ক্লিক করুন এবং Reduce file size সিলেক্ট করুন।



প্রিভিউয়ের বিল্ট- ইন ফাইল কম্প্রেশন সিস্টেমের সমস্যা হচ্ছে পরবর্তীতে ইমেজের মান অনেকাংশে কমে যায়। এতে করে আপনার পিডিএফের ইমেজ বা গ্রাফিক দেখতে অস্পষ্ট ও কখনও কখনও দুর্বোধ্য হয়ে যায়।
এর সমাধান হচ্ছে ফাইলের আকার ছোট করার পরেও ডকুমেন্টের পুরোটা জুড়ে ইমেজের মান রক্ষা করার জন্য যে ভারসাম্য দরকার তা আপনি কাস্টম কোয়ার্টজ ফিল্টার ব্যবহার করে পেতে পারেন।
এই টিউটোরিয়ালের জন্য আমরা জেরোম কোলাসের তৈরি অ্যাপল কোয়ার্টজ ইন্সটল করে ব্যবহার করে ২৫ মেগাবাইটের পিডিএফ ফাইলের আকার কমিয়ে নিয়ন্ত্রণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে আসবো। আপনি চাইলে এই ফিল্টারগুলো গিটহাব পেইজ থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারেন।
প্রথম ধাপ: কোয়ার্টজ ফিল্টারগুলোকে আপনার ~/Library/ folder-এ স্থানান্তর করুন।
প্রথম ধাপটি হচ্ছে আপনার কম্পিউটারে অ্যাপল কোয়ার্টজ ফিল্টার ইন্সটল করা। বিশেষ করে সিস্টেমের লাইব্রেরী ফোল্ডারের মধ্যের ফিল্টারগুলো।
এটা করার জন্য কোয়ার্টজ ফিল্টারগুলোকে আপনার ডেস্কটপে ডাউনলোড করে আনজিপ করুন। ফাইন্ডার চালু করে কীবোর্ডের CMD + SHIFT + G শর্টকাট ব্যবহার করে Go to folder বের করে নিয়ে আসুন। এরপর এটির ড্রপ ডাউন মেনুতে চলে যান। লাইব্রেরী ফোল্ডার ওপেন করতে এন্টার চাপুন।



একবার ফিল্টারস ফোল্ডারের অবস্থান চিহ্নিত করতে পারলে কোয়ার্টজ ফিল্টারগুলো তার মধ্যে পেস্ট করে দিন। ফিল্টারস ফোল্ডার যদি পাওয়া না যায় তবে "ফিল্টারস" নামে একটি নতুন ফোল্ডার খুলে ফেলুন।
পরামর্শ: অনেকেই শুধুমাত্র একটা অ্যাডমিন অ্যাকাউন্টের জন্য এই ফিল্টারগুলো রাখতে চান। এটা করতে হলে আপনাকে ইউজারস লাইব্রেরীতে একটি ফিল্টারস ফোল্ডার তৈরি করতে হবে। এটার অবস্থান চিহ্নিত করতে CMD + SHIFT + G চাপুন এবং নিচের লেখাগুলো টাইপ করুন:
1 |
/Users/<your user name>/Library |
এরপর এন্টার চাপুন। ডিরেক্টরিতে যদি ইতোমধ্যে ফিল্টারস ফোল্ডার না থেকে থাকে তাহলে নতুন একটু তৈরি করে ফেলুন।
দ্বিতীয় ধাপ: অটোমেটর চালু করুন এবং অটোমেটর অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করুন।
পরবর্তী ধাপ হচ্ছে আমরা যে ফিল্টারগুলো এইমাত্র ইন্সটল করলাম সেগুলো ব্যবহার করে যেকোনো পিডিএফ কম্প্রেস করার জন্য একটি অটোমেটর অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা।
অটোমেটর চালু করুন এবং নতুন একটি ডকুমেন্ট তৈরি করুন। অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করুন। এরপর কাজ শুরু করার জন্য নীল রঙের Choose বাটনটি চাপুন।



হাতের বাম দিকে রয়েছে অটোমেটর লাইব্রেরী। Apply Quartz Filter to PDF Documents অ্যাকশনটি চিহ্নিত করতে সার্চ ফিল্ড ব্যবহার করুন। এটাকে কার্যকর করতে উইন্ডোতে হাতের ডান দিকে টেনে নিয়ে আসুন।



শুরু করার আগে, আপনি এই কাজের ক্ষেত্রটিতে কপি ফাইন্ডার আইটেমগুলোর অ্যাকশন যোগ করতে আগ্রহী কিনা তা জিজ্ঞেস করে একটি পপ-আপ ম্যাসেজ আসবে। আমি জোরালোভাবে পরামর্শ দিবো এটি যোগ করে ফেলতে। কেননা এতে করে আপনার কাজের ফলাফল যদি আশানুরূপ না হয় তাহলে যেন মূল ফাইলটি খুঁজে পেতে খুব বেশি বেগ পেতে না হয়।



চূড়ান্ত ধাপে আপনি পিডিএফ কম্প্রেস করার জন্য যে কোয়ার্টজ ফিল্টারটি ব্যবহার করবেন সেটি বাছাই করুন। আপনি যদি প্রথম ধাপের নির্দেশনা মোতাবেক কোয়ার্টজ ফিল্টার ইন্সটল করে থাকেন তাহলে ফিল্টারের ড্রপ ডাউন মেনুতে ক্লিক করলে সেগুলোকে লিস্ট আকারে দেখতে পাবেন। ফিল্টারটি বাছাই করার পর অ্যাপ্লিকেশনটিকে একটি নাম দিন এবং ডেস্কটপে সেভ করে রাখুন।
তৃতীয় ধাপ: আপনার পিডিএফটিকে সদ্য তৈরি অটোমেটর অ্যাপ্লিকেশনে টেনে নিয়ে ড্রপ করুন।
এরপর থেকে ফাইল কম্প্রেশন করা একদম সোজাসাপটা। নতুন অটোমেটর অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করার জন্য আপনার পিডিএফটি টেনে নিয়ে অ্যাপ্লিকেশনের উপর ড্রপ করুন। এভাবে আপনার পিডিএফের একটি কম্প্রেসড কপি তৈরি হবে। অটোমেটরে অ্যাপ্লিকেশন তৈরির সময় আপনি যে কোয়ার্টজ ফিল্টারটি বাছাই করেছিলেন সেটির উপর আকার নির্ভর করবে।
আমার ২৫ মেগাবাইট পিডিএফের জন্য আমি গড়ে ১৫০ ডিপিআই মানের ফিল্টার সিলেক্ট করেছিলাম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটাই আদর্শ মানের হিসেবে ধরা হয়। কমপ্রেসড ফাইলটি প্রায় ৩ মেগাবাইটের এবং ইমেজের গুণগত মানও সব মিলিয়ে বেশ গ্রহণযোগ্য। এমনকি ছোট ইমেজগুলোর ক্ষেত্রেও।



আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোয়ার্টজ ফিল্টারগুলোর চাইলে যে কোন মানে পরিবর্তিত করতে পারবেন। শুধুমাত্র অটোমেটরে সেই পরিবর্তনগুলো সেভ করে ফেলুন আর মূল ফাইলটি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন (এসব ক্ষেত্রে কপি ফাইন্ডার আইটেমস অ্যাকশন কাজে লাগে)।
উইন্ডো ব্যবহারকারীদের জন্য: আপনার পিডিএফগুলোকে স্মলপিডিএফের সাহায্যে কম্প্রেস করুন
উইন্ডোর ক্ষেত্রে, কম্প্রেশনের জন্য সবচাইতে সহজলভ্য যে সমাধানটি সেখানে বিদ্যমান তা হল, একটি নতুন ওয়ার্ড ডকুমেন্ট বা পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করে পিডিএফ হিসেবে সেভ করার অপশনটি সিলেক্ট করে ডেস্কটপে সেভ করার আগে Minimize size অপশনটি বেছে নিন।
টেক্সট-বেইজড পিডিএফের জন্য এটি কাজে লাগলেও আপনার ডকুমেন্ট সাজাতে যদি নানান ধরণের ডিজাইন এলিমেন্ট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে গুণগত মান অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া আপনি ওয়ার্ড ২০১৩ বা আরও নতুন ভার্সনে পিডিএফ ইম্পোর্ট করে কমপ্রেসড ফরম্যাটে এক্সপোর্ট করতে পারেন। আবারও বলছি, মানের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতেই পারেন।



সাধারণত সবাই যা করে তা হল, অ্যাডোবি অ্যাক্রোব্যাট প্রো এবং ইনডিজাইনের মতো প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ব্যবহার করে পিডিএফ অপটিমাইজ এবং কম্প্রেস করে। আপনার যদি ক্রিয়েটিভ ক্লাউডের সাবস্ক্রিপশন থাকে তাহলে এই দুটোই আপনাকে উন্নত মানের ফাইল তৈরি করে দিবে। এছাড়া, প্রিমোপিডিএফের মতো অন্যান্য ডেস্কটপ অল্টারনেটিভ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। তবে আমার মনে হয়েছে, হয় ইমেজের মান খারাপ হয়ে যায় অথবা মূল ভার্সন থেকে পিডিএফটি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায় কম্প্রেস করার পর।
এর পরিবর্তে আপনি চাইলে স্মলপিডিএফ নামের অনলাইন টুলটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি এমন একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন যেখানে বেশ কয়েকটি পিডিএফ টুল রয়েছে। আর আপনি যখন যেখানেই যান না কেন, এটি সব সময়ই সহজলভ্য (আবার, যেহেতু এটি একটি ওয়েব টুল, কাজেই আপনি চাইলে এটিকে ম্যাক বা লিনাক্স চালিত কম্পিউটার বা ক্রোমবুকে ব্যবহার করতে পারেন)। এর মধ্যে একটি হচ্ছে কম্প্রেস পিডিএফ টুল যা দিয়ে আপনি আপনার হার্ড ড্রাইভ থেকে ফাইল ড্র্যাগ এবং ড্রপ বা সিলেক্ট করে ফাইলের সাইজ বহুলাংশে কমিয়ে ফেলতে পারেন।



আমি আমার ২৫ মেগাবাইটের পিডিএফ দিয়ে এই অ্যাপ্লিকেশনটি পরীক্ষা করে দেখেছি। এটার আকার প্রায় ২ মেগাবাইটে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিলো। অনলাইনে পাবলিশ বা সেন্ড করার জন্য এই সাইজটি একদম আদর্শ বলা চলে। ইমেজের মান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে অন্যান্য উইন্ডোজ-অনলি অ্যাপ্লিকেশন যেভাবে পিডিএফ কম্প্রেশনের কাজ করে সেই তুলনায় বেশ গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে।
আপনার মতামত
ইমেজের মান অক্ষুণ্ণ রেখে পিডিএফ কম্প্রেস করতে আপনি কী ব্যবহার করেন? আপনার নিজের ব্যবহৃত টুল এবং টেকনিকগুলো নিচের কমেন্টে শেয়ার করুন।
উৎস: ডকুমেন্ট আইকনটি ডিজাইন করেছেন নাউন প্রজেক্টের দিমিত্রি সানসিফার